আসসালামু আলাইকুম
এই পোস্টটি পড়ে আপনারা যা জানতে পারবেন-
- চোখ লাল হওয়ার কারণ,
- চোখ ওঠা কি,
- চোখের প্রদাহ,
- চোখের উপর প্রেসার কখন বেড়ে যায়,
- চোখের পাতায় এলার্জি কেন হয়,
- চোখের পাতার এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়,
চোখ
আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো চোখ।যেটির মাধ্যমে আমরা পুরো পৃথিবী দেখতে পাই।যাদের চোখ নেই তারা কত অসহায়। পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পারেনা। এজন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত চোখের সঠিক যত্ন নেওয়া।
চোখ লাল হওয়ার কারণ
চোখ লাল হওয়ার সবচেয়ে কমন কারণ হচ্ছে চোখের অ্যালার্জি। যাদের অ্যালার্জি হল টেনডেন্সি আছে তাদের খুব তাড়াতাড়ি চোখ লাল হয়ে যায়। বেশিরভাগ রোগীদের চোখ লাল হওয়ার সাথে সাথে চুলকানিও হয় এমনকি গোসলের পর চোখ লাল হয়ে যায়।
এসব বিষয়ে আপনাদেরকে খেয়াল করতে হবে আপনাদের চোখ কোন সময়ে লাল হচ্ছে এর সাথে হালকা পানি পড়ছে কিনা এবং চোখে ব্যাথা আছে কিনা। যদি চোখে ব্যাথা এবং এর সাথে শুধুই চুলকানি থাকে তাহলে বুঝতে হবে এর প্রধান কারণ হচ্ছে অ্যালার্জি।
এর জন্য আপনারা যা করতে পারেন যেসব কারণ থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে সে সব থেকে দূরে থাকতে হবে। দেখতে হবে এগুলোর ডাস্ট বা ধুলাবালি থেকে হচ্ছে কিনা এবং খাবারের সাথে যুক্ত কিনা। আপনার যে খাবারগুলো থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে সেগুলো এড়িয়ে চলবেন।
চোখ ওঠা
চোখ লাল হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে চোখ ওঠা। এই চোখ ওঠার দুটি কারণ হতে পারে একটি ব্যাকটেরিয়াল অপরটি ভাইরাল। যদি batterial হয় তাহলে দেখা যায় যে চোখের পাতাটা যেটাকে আমরা আইলেশ বলি সেটা ফুলে যায় আইলে শেয়ার গোড়ায় ময়লা জমে যায়। অধিকাংশ রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ঘুম থেকে উঠলে পুরো চোখ ময়লায় জমাট বেঁধে যায়। এগুলো লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে আপনার চোখ উঠেছে এর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ খুবই জরুরী।
আর ভাইরাল হলে সেক্ষেত্রে যদি চোখ লাল হয়, পানি পড়ে এবং চোখ খচখচ করে কিন্তু, চোখে কোন চুলকানি নেই তাহলে বুঝতে হবে এটি অ্যালার্জির সাথে মিল থাকলেও অ্যালার্জি নয়।
You may also likes
এলার্জি লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
সারা জীবনের জন্য ব্রণ সমস্যা ভুলে যান (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
জাপানেরা ১০০ বছর বেঁচে থাকার রহস্য (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
রোগ প্রতিরোধে কাঁচা হলুদ (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
মেয়েদের কুমারিত্ব পরীক্ষার পদ্ধতি (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
চোখের প্রদাহ
চোখের প্রদাহ একটি গুরুতর সমস্যা। যেখানে দেখা যায় রোগীর শারীরিকভাবে বাঁতের ব্যাথা বা পিঠে ব্যথা আছে। এরকম বিভিন্ন সমস্যা রোগীর থাকতে পারে। এগুলোর সাথে তার চোখ লাল এবং ব্যাথা হবে। রোদ অথবা লাইটের সামনে গেলে চোখ বেশি ব্যাথা করবে ও চোখ দিয়ে পানি পড়বে। এই ব্যাথাটা যখন থাকবে তখন বুঝতে হবে আপনার এটি সামান্য কোন সমস্যা না একটি গুরুতর সমস্যা এটাকে বলে ইউভিআইটিস। ইউভিআইটিস এর চিকিৎসা অনেকটা সময় সাপেক্ষ এত তাড়াতাড়ি সেরে যায় না সময় লাগে বারবার চিকিৎসকের নিকট যেতে হয়। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই সকল সমস্যারই সঠিক চিকিৎসা রয়েছে।
চোখে প্রেসার বেড়ে যাওয়া এবং গ্লো কমে যাওয়া
এমন অনেক কারণ আছে যা থেকে হঠাৎ চোখের অ্যাঙ্গেল গুলোকে ব্লক করে দিয়ে চোখে ব্যাথা হতে পারে এবং লাল হতে পারে এক্ষেত্রে রোগীরা সাধারণত একটু বয়স্কজনিত কারণে হয়। যাদের চোখে ছানি আছে কিন্তু সে সময় মতো সেটি সার্জারি করেনি এই ছানিটা ম্যাচিওর হতে হতে দেখা যায় যে অ্যাঙ্গেল গুলোকে ব্লক করে দেয় তখন চোখে প্রেসার বেড়ে যায়। চোখে পানি যাবার যে রাস্তাটি আছে তা হয়তো বন্ধ হয়ে গেছে এগুলোর জরুরী ট্রিটমেন্ট হচ্ছে ছানিটা অপারেশন করে নেওয়া।
চোখের পাতায় এলার্জি কেন হয়
চোখের এলার্জি এবং চোখের পাতা চুলকানি দুটোই ভিন্ন বিষয়। আমাদের মাথায় যে খুশকি হয় সেই খুশকির মত চোখের পাতার গোড়ালিতে মরা চামড়া জমা হয় সেখানে ইনফেকশন তৈরি করে সেটাকেই বলা হয় চোখের পাতায় বা গোড়ার অ্যালার্জি। যেসব রোগীদের স্লোরিয়াসিস থাকে তাদেরও চোখের পাতায় এলার্জি হয়। যাদের মাথার ত্বকে খুশকি থাকে তাদের চোখের পাতায় বেশি অ্যালার্জি হয়।
ভালো হওয়ার জন্য সবচেয়ে কমন যে কাজটি করতে হবে সেটি হল চোখের পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে এক্ষেত্রে ড্রপ ব্যবহার করলে হবে না। পরিষ্কার করার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে জনসন বেবি শ্যাম্পু নিবেন এটি সাধারণত অন্যান্য শ্যাম্পুর মতো চোখে ধরে না।
এক ফোটা জনসন বেবি শ্যাম্পু এতে দুই ফোঁটা পানি মিশিয়ে কটন বাড দিয়ে মিক্স করবেন চোখের পাতায় লাগিয়ে ভালো হবে পরিষ্কার করে নিবেন। এ পাপড়িটা আপনাকে প্রত্যেকদিন পরিস্কার করতে হবে এতে করে দেখবেন আপনার চোখের পাপড়ি গুলো পরিষ্কার থাকবে এবং চোখের পাতার চুলকানি থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
চোখের অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
চোখের এলার্জি দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায় বেশি কার্যকরী। চোখে চুলকানি হলে আপনারা কোন সময় আঙ্গুল দিয়ে ঘষাঘষি করবেন না আর নিতান্তই যদি চোখ ঘষতে হয় তাহলে আঙ্গুলের মাথায় পরিষ্কার সুতি রেশ ছাড়া কাপড় দিয়ে আস্তে করে ঘষবেন। রেশ ছাড়া কাপড় এইজন্য যে এই রেশ চোখে গেলে চোখে আরও সমস্যা হতে পারে তাই রেশ ছাড়া কাপড় দিয়ে চোখ চুলকাবেন।
আপনারা যখন বাইরে যাবেন অবশ্যই চোখের সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। কারণ সানগ্লাস আমাদের চোখের অনেকটা জুড়ে জুড়ে থাকে চোখে ধুলোবালি প্রবেশ করতে পারবে না এর মাধ্যমে আমরা চোখের এলার্জি থেকে চোখকে রক্ষা করতে পারবো। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিনা পাওয়ারের চশমা পড়ে বাইরে বের করবেন এর ফলে বাচ্চাদের চোখও অ্যালার্জি থেকে রক্ষা পাবে।
আপনারা বাইরের কাজ থেকে ঘরে ফিরে শরীরের জামা কাপড় ছেড়ে নতুন জামা কাপড় করতে হবে কারণ আপনার যে জামা কাপড় পড়ে বাইরে গেছেন তাতে অনেক ধুলোবালি লেগে থাকে এগুলো আপনাদের চোখে প্রবেশ করলে চোখে অ্যালার্জি হতে পারে।
সব সময় চোখ মুখ পরিষ্কার রাখা এটিও চোখের অ্যালার্জি দূর করতে অনেক সাহায্য করে। চোখের পাতায় যে ময়লা জমে সেগুলো সাধারণত ড্রপ ব্যবহার করলে যায় না দৈনন্দিন চোখের পাপড়ি পরিষ্কার করার মাধ্যমে এটি দূর করা সম্ভব। আমাদের বিছানা বালিশের কভার মাঝে মাঝে পরিবর্তন করতে হবে। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে এর ফলে আপনারা চোখকে অ্যালার্জি থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
আপনাদের মাথায় যদি খুশি থাকে অবশ্যই খুশকি দূর করতে হবে কেননা খুশকি মাথা থেকে কপাল হয়ে আমাদের চোখে আসে চোখে যখন প্রবেশ করে তখন চোখে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। এজন্য আপনাদেরকে মাথা থেকে খুশকি দূর করতে হবে এক্ষেত্রে যদি স্কিনের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হয় সেটা করে এন্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
যে খাবারগুলো খেলে আপনাদের এলার্জি হয় এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন অনেকের বেগুন, চিংড়ি মাছ, ডিম খেলে অ্যালার্জি হয় তাই এগুলো এড়িয়ে চলবেন।
চোখ যদি আপনাদের খুব চুলকায় তাহলে ঠান্ডা পানিতে সুতি কাপড় ভিজিয়ে চোখে সেঁক দিবেন তাহলে কিন্তু আপনারা অনেকটা আরাম অনুভব করবেন।
আর আপনাদের যাদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে তারা বাইরে গেলে অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহার করবেন। জাস্ট অ্যালার্জি যদি আপনাদের হয় তাহলে কিন্তু চোখ চুলকাতে পারে।
ছোট বাচ্চারা স্কুলে গিয়ে খেলাধুলা করে মাঠের ঘাসের মধ্যে যে ধুলোবালি থাকে এবং মাঠে চার পাশে বিভিন্ন ফুলের গাছও লাগানো থাকে সেগুলো থেকে পরাগ রেণু বাচ্চাদের চোখে প্রবেশ করে সেটা থেকে কিন্তু বাচ্চাদের চোখে অ্যালার্জি হতে পারে। এসব ব্যাপারে অবশ্য বাচ্চাদের কে সচেতন করতে হবে।
উল্লেখিত নিয়মগুলো যদি আপনারা সঠিকভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে অ্যালার্জি থেকে নিজেকে এবং আপনার পরিবার পরিজনকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন। চোখের যত্ন নিয়ে সুস্থ থাকবেন।
Related search
দাঁতের মাড়ি ফোলার কারণ ও প্রতিকার (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
টিউমার কি পাকস্থলীর টিউমার হলে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
হার্ট এটাকে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ব্রণের দাগ ও গর্ত করতে ঘরোয়া ও আধুনিক চিকিৎসা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
পাইলসের কার্যকারী ঘরোয়া সমাধান (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
দুশ্চিন্তা করলে কি কি সমস্যা হয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গেলে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে যে খাবার খাবেন (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
গর্ভধারণের সবচেয়ে উপযুক্ত বয়স (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের লক্ষণ এবং সুরক্ষা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)