আসসালামু আলাইকুম
এই পোস্টটি পড়ে আপনারা যা জানতে পারবেন-
- ব্রণের দাগ ও গর্ত কিভাবে দূর করা যায়,
- গর্ত ও দাগ দূর হওয়া সম্ভব কিনা,
-ত্বকে দাগ ও গর্ত দূর করার ঘরোয়া উপায়,
-আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রণ ব্রণের দাগ ও কত দূর করার প্রক্রিয়া,
ব্রন
মুখ ভর্তি ব্রন! আমাদের কারোরই এটি ভালো লাগে না। ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় যখন আমাদের মুখ ভর্তি করে ব্রনগুলো ওঠে।
এই ব্রন নিয়ে সবার একটায় প্রশ্ন যে ব্রণ কিভাবে সারবে এবং কত দিনে? এর চেয়ে অনেক বেশি আতঙ্ক নিয়ে তারা এটি জানতে চান ব্রণ থেকে যে দাগ হয় বা গর্ত হয় এটির সবচেয়ে ভালো ট্রিটমেন্ট কি?
ব্রনের চিকিৎসা একদম শুরু থেকে নেওয়া উচিত এতে যে দুটি প্রধান যে জটিলতা দেখা যায় হাইপার পিগমেন্টেশন বা দাগ হওয়া কিংবা স্কার বা গর্ত হওয়া এ দুটোর ঝুঁকি কমে যায়।
ব্রন থেকে যদি এই জটিলতাগুলো হয়ে যায় সেক্ষেত্রে চিকিৎসা গুলো হল:
প্রথমত, ব্রণ টাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা।
দ্বিতীয়ত, হাইপার পিগমেন্টেশনের চিকিৎসা করতে হবে।
তৃতীয়ত,একনি স্কার বা ব্রণ থেকে যে গর্ত গুলো তৈরি হয় এর চিকিৎসা করা।
ত্বকে স্কার বা গর্ত হওয়ার কারণ:
ত্বকে সাধারণত গর্ত বা স্কার্ তৈরি হয় এর সবচেয়ে কমন কিছু কারণ হলো একনি বা ব্রনের গর্ত। ত্বকে অনেকদিন ব্রণ থাকার ফলে প্রদাহ হয় এবং ব্রণও সেরে যাওয়ার পরে যে বা গর্ত বা স্কার্ তৈরি হয় এটিই এর প্রধান কারণ। তার পাশাপাশি সার্জিক্যাল স্কার্ অপারেশনের কারণে অনেক জায়গায় কাটা ছেঁড়া হয়ে থাকে সেই জায়গাগুলোতে পরবর্তী সময়ে হেলিং হওয়ার পরে স্কার্ তৈরি হয়ে যায়। আরও কিছু কারণ হতে পারে যেমন চিকেন পক্স, কোন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল সে আঘাত ভালো হয়ে যাওয়ার পরে ওই জায়গায় এক ধরনের ক্ষত তৈরি হয়। সাধারণত এসব কারণ নিয়ে ত্বকে গর্ত বা স্কার্ তৈরি হয়।আমাদের ত্বকে কোলাজেন নামক টিস্যু আছে যেটা আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ একটি কোষ ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট। এই ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট কোলাজেন ধরে রাখে। কোন কারনে যদি ত্বকে প্রদাহ তৈরি হয় সেটা কোন কাটা ছেঁড়া হোক বা একনির কারণে হোক এরকম একটি কারণে যদি ত্বকে প্রদাহ তৈরি হয় এর ফলে কোলাজেন গুলো ভেঙ্গে যায়। যখনই কোলাজেন গুলো ভেঙে যায় সে জায়গায় নতুন করে যখন কোলাজেন তৈরি হয় তখন, এলোমেলোভাবে তৈরি হয় আর এলোমেলোভাবে কোলাজেন তৈরি হওয়ার কারণে এ ধরনের গর্তগুলো সৃষ্টি হয়ে থাকে।
You may also likes
সারা জীবনের জন্য ব্রণ সমস্যা ভুলে যান বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
সৌন্দর্যের জগতে এলোভেরার উপকারিতা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
রোগ প্রতিরোধে কাঁচা হলুদ (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
শরীরের জন্য কাঁচা হলুদ (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে যে খাবার খাবেন (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
চালের গুঁড়ো দিয়ে রূপচর্চা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
চুল পড়া রোধে ঘরোয়া উপায় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের গর্ত রিমুভের সীমিত কিছু উপায়
এ গর্ত গুলো দেখা দিলে অবশ্যই সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে হবে সেটি ঘরোয়াভাবে হোক আর ডক্টরের কাছে গিয়ে হোক। যখনই কোন একটি কারণে ত্বকে গর্ত তৈরি হল বা স্কার্ তৈরি হলো এটি তৈরি হওয়ার দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে যদি চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে তার ফিডব্যাক খুব ভালো পাওয়া যায়। যখনই রোগী তার চিকিৎসা ব্যাহত করলো ছয় মাস বা এক বছর। ত্বকে গর্তগুলো রয়ে গিয়েছে চিকিৎসা করা হয়নি সেক্ষেত্রে চিকিৎসা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে এ পর্যায়ে হোম রেমেডি কার্যকর হবে না।৫০ সেন্টিমিটার দূর থেকে যদি কোন ত্বকের গর্ত দেখা যায় এবং আমরা যখন গর্তের জায়গাটা একটু টানটান করে ধরি যদি সেটি ত্বকে সমান হয়ে যায় তাহলে সেটি হোম রেমেডিতে ফিডব্যাক টা ভালো আসার সম্ভাবনা থাকে।
যে ধরনের স্কার গুলো চামড়া টেনে ধরলেও নরমাল হয় না এবং গর্তগুলো অনেক বড় সাইজের বেশি দিন ধরে ছিল সেগুলো ঘরোয়াভাবে ট্রিটমেন্ট করলে ভালো ফলাফল আসবেনা। ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়টি হলো দৈনন্দিন যে স্কিন কেয়ার রুটিন সেটি ফলো করা। প্রতিদিন ফেস সঠিকভাবে ক্লিন করতে হবে, খাদ্যাভ্যাসে অবশ্যই সঠিক পরিমাণে ভেজিটেবলস্ ফলমূল ইত্যাদি রাখতে হবে।
অনেক বেশি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এগুলোর পাশাপাশি যদি ভিটামিন সি সিরাম, ভিটামিন 'ই' যুক্ত ক্রিম বাজারে বিভিন্ন পয়েন্টের ক্রিম পাওয়া যায় এগুলো যদি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অনেকাংশে গর্ত গুলো দূর করা সম্ভব। তবে এগুলো অনেক দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা প্রায় নয় মাস থেকে বারো মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। এর চিকিৎসা অবশ্যই আপনাদেরকে অতি দ্রুত এবং ডার্মাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নিয়ে শুরু করতে হবে।
এগুলোর পাশাপাশি যদি আপনার ফেইস ক্লিনজার যদি ভালো হয় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার থাকে যেমন- মালটা, লেমন জুস বা ক্যারোট জুস এগুলো কিন্তু, ঘরোয়া উপায় হিসেবে একটি ভালো সাপোর্ট দিতে পারে। কিন্তু যাদের স্কারগুলোর অনেক সময় পার হয়েছে দূর থেকে সহজেই চোখে পড়ে এ ধরনের স্কার্ বা গর্তগুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে সমাধান করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় বেছে না নিয়ে অবশ্যই একজন ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে।
ব্রনের ক্ষত বা গর্তের আধুনিক চিকিৎসা
আধুনিক চিকিৎসার কয়েকটি ধাপ রয়েছে যেমন- মাইক্রোনিডলিং হচ্ছে এক ধরনের পেন দিয়ে করা হয় এই পেনকে ডার্মা পেন বলা হয়। এটার সাথে একটা নিডেলকে যুক্ত করা হয়। এই ডার্মা পেনের মাধ্যমে ফেইসে এক ধরনের পেইন দেওয়া হয়। সাধারণত ত্বকের যে স্থানে স্কার বা গর্ত তৈরি হয়ে থাকে সেই জায়গাগুলোতে মাইক্রোনিডেলিংটা ব্যবহার করা হয়। এতে করে যেটা হয় সেটি হচ্ছে ত্বকে এক প্রকারের ইনজুরি করা হয় এবং সেই জায়গায় ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট, লিকোসাইট আর বিভিন্ন ধরনের ব্লাডিলেড আসে এগুলো আসার পরপরই ত্বকের গ্রোথ রিলিজ হয় এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিকিৎসার কারণে যে প্রতিক্রিয়া শুরু হল ফলাফলস্বরূপ এ ধরনের স্কার গুলো আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে আসে।তবে মাইক্রোনিডেলিং কোন ধরনের ত্বকে করা যাবেনা তার একটি বর্ডার লাইন আছে। সাধারণত যেই স্কারগুলো ত্বকে দীর্ঘদিন ধরে আছে অনেক গভীর এবং ভেতর থেকে টেনে ধরে থাকে, নিচু হয়ে গেছে সে সেখানে মাইক্রোনিডেলিং খুব একটা কাজ করে না। তবে গ্রেড ওয়ান, গ্রেট টু নরমাল ক্ষত বা স্কার গুলোতে মাইক্রোনিডেলিং ব্যবহার করা যায়। যখনই মাইক্রোনিডেলিং এর সাথে পি আর পি কে যুক্ত করা হয় ক্ষতস্থানে গ্রোথ আরো বেড়ে যাবে। কেননা, মাইক্রোনিডেলিং এর মাধ্যমে যে প্ল্যাটিলেট তৈরি হয়েছিল তার চেয়ে পিআরপি পদ্ধতিতে আর বেশি প্ল্যাটিলেট তৈরি হয় আর এই প্ল্যাটিলেটের ঘনত্ব বেশি বা গ্রোথ ফেক্টর টা অনেক বেশি এর মানে হচ্ছে ফলাফলও অনেক ভালো।
একটা মাইক্রোনিডেলিং এর চিকিৎসা শুরু করার পরে আপনি দেখতে পাবেন স্কার বা গর্তটা অনেকাংশে ভরাট হয়ে আসছে। মাইক্রেনিডেলিং বা লেজারপদ্ধতি যে ধরনের চিকিৎসায় হোক না কেন রোগী কতটা সুস্থ হবে বা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা বেশি, তার স্কিনের টাইপ টা কি রকম স্কিনের ইমিউনিটি কতটা ভালো এবং ডাক্তারের পরামর্শ কতটা মেনে চলছেন যে ডাক্তার চিকিৎসা করছেন রোগী ইনজুরি গুলো প্রপারলি মেইনটেন করে চিকিৎসা দিচ্ছেন এগুলোর উপরই নির্ভর করে যে কত দ্রুত তার এ সমস্যাটি সেরে যাবে।
প্রতিটি রোগীর উচিত একজন অভিজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্ট এর কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়া কেননা, এই পদ্ধতি মেনে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে এগুলোর কিছু যদি একটা ভুল হয়ে যায় তাহলে ভালো কিছু হওয়ার পরিবর্তে উল্টো খারাপ ফলাফল আসবে এজন্য অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্টের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিবেন।
এই যে মাইক্রোনিডেলিং এবং পিআরপি একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হীন ট্রিটমেন্ট যদি সঠিকভাবে করা হয়ে থাকে। কারণ মাইক্রোনিডেলিং একটি ন্যাচারাল পদ্ধতি এতে বাইরের কোন কিছু ব্যবহার করা হয় না একটি মাইক্রোনিডেলিং দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে ত্বকে এক ধরনের ডিসিপ্লেইন ইনজুরি এবং ডিসিপ্লেইন হেলিং তৈরি করা হয়। সেখান থেকে ত্বকে গর্তগুলো ভরাট হয়ে আসে এবং রোগী খুব নিরাপদ ভাবে চিকিৎসা পদ্ধতিটি গ্রহণ করতে পারে।
স্বল্প সময়ের চিকিৎসা পদ্ধতি
যদি আপনি স্বল্প সময়ে ত্বকের গর্ত বা ক্ষত দূর করতে চান সেক্ষেত্রে মাইক্রোনিডলিং, পিআরপি, লেজার ও কেমিক্যাল পিলিং যেটির মাধ্যমেই করতে চান না কেন সবগুলোই সময় সাপেক্ষ। তিন থেকে পাঁচ মাসের মতো একটা সময় লেগে যায় স্কার বা গর্তকে স্বাভাবিক ত্বকে রূপান্তরিত করতে। তবে কেউ যদি চায় যে খুব দ্রুত এ ক্ষত বা গর্তকে সারাতে চায় সেক্ষেত্রে তার জন্য অবশ্যই একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় এর প্রথম টি সাবসেশন।স্কারের নিচের দিকে যে অংশগুলো ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট টিস্যুর কারণে ভেতরের দিকে ঢুকে থাকে সেই গর্তের জায়গার নিচে এক ধরনের নিডেল করা যায় এটিকে বলা হয় সাবসেশন। একজন অভিজ্ঞ ডামাডোলজিস্ট জানেন কিভাবে সেই জায়গাগুলোতে সাবসেশন করতে হয় আর যারা এই বিষয়ে অনভিজ্ঞ তাদের দ্বারা ইনজুরি হবার সম্ভাবনা আছে।
সাবসেশন করার পরই যেটা করা হয় ফিলার। সাধারণত যে জায়গায় গ্যাপটা তৈরি হলো সেক্ষেত্রে ফিলার ব্যবহার করা হয় এবং ১০ মিনিটের মধ্যেই সে গর্ত গুলোকে নরমাল পর্যায়ে আনা যায়। এটি খুবই অল্প সময়ের করা যায় এখন ব্যাথাহীনভাবে করার সুযোগ আছে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে এই সাবসেশন এবং ডার্মা ফিলার ব্যবহার করে বিশ মিনিটের মধ্যে এই স্কার বা গর্তের ভালো একটি সমাধান পাওয়া যায়। যদিও এটি একটি ব্যয় সাপেক্ষ তবু ও অতি দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য এটি একটি ভালো পদ্ধতি।
Related search
ধূমপান থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়ার উপায় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার (ঘরোয়া পদ্ধতি বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গেলে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
এলার্জির লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
আঙ্গুলের নখ দেখলেই বোঝা যাবে স্বাস্থ্যের কি অবস্থা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
নিদ্রাহীনতার ১৩ টি কারণ ও চিকিৎসা (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)